ফেনী সমিতি ইউকের নাম, লোগো ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুলাই ২০২৫
ফেনী সমিতি ইউকের নাম, লোগো ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে ফেনী সমিতি ইউকে। গত ১১ জুলাই, শুক্রবার দুপুরে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফেনী সমিতি ইউকের ট্রাস্টি আশরাফ উদ্দিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে কতিপয় ব্যক্তি ফেনী সমিতি ইউকের নাম, লোগো ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন এবং হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালাচ্ছেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ, অনৈতিক ও আইনের পরিপন্থী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি বলেন, ২০০৫ সালে আমরা ফেনী সমিতি ইউকে প্রতিষ্ঠা করি। পরে ২০১৩ সালে এটি চ্যারিটি কমিশনে চ্যারিটি সংগঠন হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করি, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ১১৫৫৯১৫। কমিশনে ফাউন্ডার ট্রাস্টি হিসেবে মরহুম প্রফেসর নুরুল হক, মো. শাহজাহান, খুরশিদ আলম এবং আমি, আশরাফ উদ্দিন নিযুক্ত হই। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে আব্বাস উদ্দিন ট্রাস্টি হিসেবে নিযুক্ত হন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মরহুম প্রফেসর নুরুল হক সাহেব প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন এবং মো. শাহজাহান ভাইস প্রেসিডেন্ট, মো. খুরশিদ আলম সেক্রেটারি ও আমি আশরাফ উদ্দিন ট্রেজারারের দায়িত্ব পালন করি। ২০১২ সালে মরহুম প্রফেসর নুরুল হক সাহেব ব্যক্তিগত কারণে সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মো. শাহজাহান দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে ফেনী সমিতি ইউকের এজিএমের মাধ্যমে মো. শাহজাহানকে পূর্ণাঙ্গ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে কুতুবউদ্দিন হাজারী ও জাহাঙ্গীর ফিরোজ ফেনী সমিতি ইউকের দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং নিজেদের ট্রাস্টি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফেনী সমিতি ইউকের নেতৃবৃন্দ বলেন, ফেনী সমিতি ইউকের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি তিন বছর পর পর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও কুতুবউদ্দিন কোনো নির্বাচন না করে লন্ডনের টুটিং এলাকায় ফেনী সমিতিকে সীমাবদ্ধ করে রাখেন। ২০২১ সালে তার কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখেন।
ফেনী সমিতি ইউকের ট্রাস্টি চেয়ারম্যান শাহজাহান বলেন, কুতুব উদ্দিনের কমিটির মেয়াদ ৪ বছর আগে শেষ হওয়া সত্ত্বেও এবং উক্ত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কমিউনিটিতে বিতর্ক থাকায় ফেনী সমিতি ইউকের ট্রাস্টিবৃন্দ ও ইউকে প্রবাসী ফেনীবাসীর অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি বারবার তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি এবং ফেনীবাসী ও ট্রাস্টিদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির পদ দখল করে ফেনীবাসীকে অসম্মান করেছেন। পরবর্তীতে ফেনীবাসীর দাবির মুখে ট্রাস্টিরা ফেনী সমিতি ইউকের গঠনতন্ত্রের ধারা ২২ অনুযায়ী গত ১০ মার্চ ২০২৫ কুতুব উদ্দিন হাজারীর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ও তাদের সকল কার্যক্রম বাতিল করেন। অন্যদিকে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ফেনী সমিতি ইউকের কার্যক্রম পরিচালনা ও নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সর্বসম্মতিক্রমে ট্রাস্টিরা গত ২১ মে ২০২৫ তারিখে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।

শাহজাহান আরও বলেন, কুতুব উদ্দিন হাজারী ও জাহাঙ্গীর ফিরোজ ভুল তথ্য প্রদানের মাধ্যমে চ্যারিটি একাউন্টে লগইন করে আমাদের ফাউন্ডার ট্রাস্টিদের বাদ দেন। পরে আমরা চ্যারিটি কমিশনকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা পুনরায় আমাদের একসেস ফিরিয়ে দেন, কারণ কমিশনের রেকর্ডে দেখা যায় আমরাই ফাউন্ডার ট্রাস্টি এবং কুতুব উদ্দিন হাজারীর ট্রাস্টি হিসেবে নিয়োগ ছিল নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, অর্থাৎ সভাপতির মেয়াদকালের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এখন তিনি আর ট্রাস্টি নন।
ফেনী সমিতি ইউকের আরেক ট্রাস্টি আব্বাস উদ্দিন বলেন, আমরাই ফেনী সমিতি ইউকের ট্রাস্টি। ইউকে চ্যারিটি কমিশনের গাইডলাইন ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একমাত্র আমরাই কমিটি গঠন, পরিচালনা ও সব বিষয় তদারকির অধিকার রাখি। অথচ আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু ব্যক্তি ফেনী সমিতি ইউকের নাম, লোগো ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে প্রোগ্রাম আয়োজন ও হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমরা তাদের মৌখিকভাবে ও সলিসিটরের মাধ্যমে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছি। আমরা আশা করি, তারা সোশ্যাল মিডিয়াসহ ফেনী সমিতি ইউকের নাম, লোগো ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন, অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাস্টিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো. শাহজাহান, আশরাফ উদ্দিন ও আব্বাস উদ্দিন হাজারী। আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ফেনী সমিতি ইউকের আহ্বায়ক ওয়ালি উল্লাহ বাচ্চু, সদস্য সচিব ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দীন ভূঁইয়া রাসেল, সদস্য কামাল উদ্দিন মিলন, নজরুল ইসলাম আজাদ, নাসির উদ্দীন সানি, আতাউর রহমান জাহিদ ও মাহফুজুল হক।

