সংযুক্ত আরব-আমিরাতে ১০ দিনে পাঁচ বাংলাদেশির মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ এপ্রিল ২০২৩
সাইফুল কবির, দুবাই থেকে:: মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব-আমিরাতে তরুণ প্রবাসী বাংলাদেশিদের মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শুধু চলতি বছরের ২১ মার্চ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত ১০ দিনে পাঁচ প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মৃতদের তালিকায় চট্টগ্রামের তিনজন, মৌলভীবাজারের একজন ও সিলেটর একজন রয়েছেন।
এরইমধ্যে চট্টগ্রাম ও সিলেটের চার প্রবাসীর মৃতদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে। এদিকে এসব প্রবাসীদের অকাল মৃত্যুতে তাদের পরিবারের পাশাপাশি আমিরাতে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমেছে।
জানা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার ভোরে ঘুমের মধ্যে মারা যান তরুণ প্রবাসী ফরহাদ আহমদ। তার বাড়ি মৌলভীবাজার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপির চন্ডিনগর গ্রামে। তিনি আজমান শহরের আল জরফ এলাকায় বসবাস করতেন। পারিবারিক আর্থিক টানাপোড়নে জীবিকার তাগিদে ফরহাদ গেল বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পাড়ি জমান আরব আমিরাতে। সম্প্রতি ফরহাদ বিয়ে করেছিলেন। ফরহাদ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তার বাবা তজমুল আলি জানিয়েছেন, ৪ লাখ টাকা ঋণ করে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে আমিরাতে যান ফরহাদ।
এদিকে গত ২৬ মার্চ ভোরে ঘুমের মধ্যে মারা যান সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা আমিরাত প্রবাসী আক্কাস আলী। তার ফুফাতো ভাই রুহুল আমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আক্কাস আলী ৮ মাস আগে আমিরাতে আসেন। সেখানে তিনি একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন। ২৬ মার্চ তিনি সেহরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে ঘুমন্ত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ৩১ মার্চ শুক্রবার তার মৃতদেহ দেশে পৌঁছেছে।
গত ২৩ মার্চ আজমান প্রদেশের আমানা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আব্দুল হালিম। তিনিও চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ভরন্যার চরের বাসিন্দা। ১৬ বছর ধরে আমিরাতে কাটমিস্ত্রি পেশায় কাজ করতেন।
এছাড়া গত ২২ মার্চ ঘুমন্ত অবস্থায় তারও মৃত্যু হয় আরব-আমিরাত প্রবাসী মিজবাহ উদ্দিনের। তার বাড়ি চট্রগ্রামের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখাল ইউনিয়নের রাজারবিল এলাকায়। মিজবাহ উদ্দীন সাড়ে তিন বছর আগে আরব আমিরাতে পাড়ি দেন। কাজ করতেন বোরকার একটি প্রতিষ্ঠানে।
এর একদিন আগে গত ২১ মার্চ রাস আল খাইমা প্রদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান একই উপজেলার আরেক প্রবাসী মোহাম্মদ আলমগীর। দুই বছর আগে আমিরাতে যান তিনি। কাজ করতেন বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে। তিনি একই উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের মাইজ কাকারা এলাকার বাসিন্দা।
সংশ্লিষ্ট প্রবাসী সূত্র জানিয়েছে, মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে চট্টগ্রামের ৩ জন ও সিলেটের ১ জন প্রবাসীর মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে। শুধু মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ফরহাদ আহমদের মৃতদেহ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

