‘ডেকেড অফ কন্ট্রিবিউশান টু বাংলা মিডিয়া পারসনালিটি’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হলেন লুৎফুন নাহার বেবী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মার্চ ২০২৩
যুক্তরাজ্যর বাংলা মিডিয়ায় দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এনটিভি ইউরোপের সিনিয়র ও জনপ্রিয় সংবাদ পাঠিকা লুৎফুন নাহার বেবীকে বিশেষ সম্মাননা ‘ডেকেড অফ কন্ট্রিবিউশান টু বাংলা মিডিয়া পারসনালিটি’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। আনন্দঘন পরিবেশে গত ৬ মার্চ দর্শক নন্দিত টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি ইউরোপের বার্ষিক প্রতিনিধি সম্মেলনে তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
এনটিভি ইউরোপের হেড অফ কমিউনিকেশনস এন্ড কমপ্লাইনস আদনান পাভেল ও জনপ্রিয় সংবাদ উপস্থাপিকা সেলিনা হায়দারের উপস্থানায় সম্মেলনে মোট ৭টি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা কর্মকর্তাদের সম্মননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে এনটিভি ইউরোপের সম্মানিত সিইও সাবরিনা হোসেন বলেন, মিডিয়া কর্মী হিসেবে লুৎফুন নাহার বেবী বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মিডিয়া সেক্টরের জন্য যে অবদান রেখেছে তা অভাবনীয় ও অকল্পনীয়। তার এ ঋণ এনটিভি সহ বৃটেনের কোনো বাংলা চ্যানেল কখনো শোধ করতে পারবে না।
উল্লেখ্য, লুৎফুন নাহার বেবী গত তিন বছর ধরে এনটিভি ইউরোপে সংবাদ পাঠিকা হিসেবে যুক্ত আছেন। এর আগে ২০০২ সালে তিনি বিলেতের জনপ্রিয় চ্যানেল একুশে টিভিতে সংবাদ পাঠের জন্য বিলেতে আসেন, পরবর্তীতে চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর একে একে বাংলাটিভি, চ্যানেল এস, এটিএন বাংলায় সাফল্যের সাথে সংবাদ পাঠ করেছেন তিনি। সংবাদ উপস্থাপনা ছাড়াও বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে কন্ঠ দিয়ে নিজেকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যান বেবী। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ধারাবর্ণনাসহ রেডিও টেলিভিশনে অসংখ্য বিজ্ঞাপনে কন্ঠ দিয়ে-কন্ঠ যে একটি শিল্প এবং জীবিকার উৎস হতে পারে তা তিনি প্রমাণ করেছেন। এছাড়াও গুণী এই নারী বাংলাদেশের জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল আলিফ লায়লাসহ বিভিন্ন নাটকে ডাবিং, বিভিন্ন ডকুমেন্ট্রিতে কন্ঠ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন।
বেবী এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, আমার সবচেয়ে ভালো লাগার কাজ ছিলো বাংলাদেশ বেতারের নিয়মিত আয়োজন যা কন্ঠরাজ মাজহারুল ইসলাম, কন্ঠরাজ নাজমুল হোসেইন , সাদেক হোসেন বাবুলের সঙ্গে যুগল কন্ঠে সেতু, শ্রুতি ভয়েজসহ বিভিন্ন স্টুডিওতে রেকর্ড করা হতো। এরমধ্যে কিছু সংগীতমালার নাম আজও মনে পড়ে। যেমন হেনোলাক্স সুরের পরশ, শরিফ মেলামাইন সংগীত মালা, মুন্নু সিরামিক, ব্লু ক্রসসহ অসংখ্য সংগীত মালা যা গ্রামে গঞ্জের প্রতিটি এলাকার শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে যেত। তাদের ভালোবাসায় পাঠানো চিঠির স্তুপের কথা মনে হলে আজও তিনি আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন। এছাডাও বাংলাদেশে স্টেজে উপস্থাপনা করা, কবিতা আবৃত্তি করা ছিলো তার অনেক ভালো লাগার জায়গা।
১৯৯১ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের কুইজ অনুষ্ঠান ‘বলুন দেখি’ উপস্থাপনার মাধ্যমে তার মিডিয়া জগতে যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর থেমে থাকেননি লুৎফুন নাহার বেবী। বাংলাদেশে জনপ্রিয় চ্যানেল একুশে টিভির সাথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ‘আপনারা দেখছেন একুশে টিভি’ এ ভয়েসটিও কিন্তু লুৎফুন নাহার বেবীর। যা এখনোও পর্যন্ত একুশে টিভি তাদের স্টেশন আইডি হিসেবে প্রতিদিন অন এয়ার হয়ে থাকে।
এদিকে এনটিভি ইউরোপ প্রসঙ্গে বেবী জানান, এনটিভি ইউরোপে কাজ করতে গিয়ে তিনি অভিভুত! এত ভলো লাগা আনন্দ ভালোবাসা সম্মান এখানে পেয়েছেন যা প্রকাশ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
এনটিভি ইউরোপের সম্মানিত সিইও সাবরিনা হোসেন, ডিরেক্টর মোস্তফা সারওয়ার বাবু ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া এই বিশেষ সম্মনান ‘ডেকেড অফ কন্ট্রিবিউশন টু বাংলা মিডিয়া পার্সনালিটি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বেবী। ভবিষৎতে এই ভালোবাসার মানুষদের কাছ থেকে হয়তো শেষ ফেয়ারওয়েল নিয়ে তাঁর এই মিডিয়ার বর্নাঢ্য কর্মজীবনের ইতি টানবেন।
ব্যক্তিগত জীবনে দুই কন্যা সন্তান রাদিতা আদনিন ও আনিকা আমরিনের গর্বিত মা লুৎফুন নাহার বেবী। যারা তাকে সুখে-দুখে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছে। ছোট বেলায় বেবী বাবাকে হারিয়েছেন। মা খাদিজা ইসলাম শিক্ষকতা পেশায় থেকে বর্তমানে অবসরে আছেন। ৫ ভাই বোন স্ব স্ব পেশায় প্রতিষ্ঠিত । সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

