ব্র্যাডফোর্ডে যথাযোগ্য মর্যাদায় একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সারওয়ার হোসেইন, ব্র্যাডফোর্ড :: যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডে গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল নর্থের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার স্থানীয় কুইন হাউজ হলে একুশের তাৎপর্য শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
জিএসসি সেন্ট্রালের নবনিযুক্ত ভাইস চেয়ারম্যান কাউন্সিলার নেছার আলীর সভাপতিত্বে ও জিএসসি নর্থের সেক্রেটারি জয়নুল আবেদীন বাবুলের সঞ্চালনায় সভার শুরুতে আল কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী আব্দুর রহিম লোদী। স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের ট্রেজারার সারওয়ার হোসেইন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেন জিএসসি সেন্ট্রাল এক্সিকিউটিভ মেম্বার হাজী আব্দুল হান্নান, সংগঠনের উপদেষ্টা আনোয়ার আলী জিতু, এমসিএ নর্থ প্রেসিডেন্ট মনজুর আহমদ, জিএসসি নর্থ ভাইস চেয়ারম্যান হাজী তৈমুছ আলী, হাজী আব্দুস সালাম, হাজী বাবুল আহমেদ, নূরে আলম রব্বানী, শিবলী শামস চৌধুরী, মনির মিয়া, ইউনুস মিয়া, নাজিরুল ইসলাম খান, মানিক মিয়া, মুন্সির আহমদ চৌধুরী, শেখ জালাল, শানু মিয়া, আদনান মিয়া, বোরহান উদ্দিন, মো. সুমন মিয়া, সাঈদ খান প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাই পৃথিবীর একমাত্র রাষ্ট্রভাষা যে ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য অসংখ্য ভাষা সৈনিকদের দীর্ঘ সংগ্রাম ও আন্দোলন করতে হয়েছে। জীবন দিতে হয়েছে রফিক সালাম, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা অসংখ্য বাংলার দামাল ছেলেদের। তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার, পেয়েছি বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। ভাষা আন্দোলনের অভূতপূর্ব ফলাফল প্রত্যক্ষ করে ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো প্যারিসে বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০০ সাল থেকে অদ্যাবধি জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত ১৯০ দেশ একুশে ফেব্রুয়ারিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে যাচ্ছে। সারা বিশ্বে ৩০ কোটির অধিক মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলছে। এ বিজয় সমগ্র বাঙালি জাতির, এই বিজয় ভাষা সৈনিকদের।
সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান কাউন্সিলার নেছার আলী বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের একাত্তর বছর পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে এখনো সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসার ঘটানো সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গসহ সকল দেশপ্রেমিক-ভাষা প্রেমিক জনগোষ্ঠীকে সর্বস্তরে বাংলাভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করে যুগের পর যুগ বাংলা ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে হলে অন্য ভাষার ওপর নিজের মায়ের ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে সামনে এগোতে হবে। বিশেষ করে বিদেশের মাটিতে এবং ব্রিটেনে আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষার প্রচলন ঘটাতে হলে প্রতিটি ঘরে সন্তানদের সাথে বাংলা ভাষায় কথা বলার অভ্যাস ও বাংলা অধ্যুষিত এলাকায় বাংলা ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে। না হয় আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কোনও এক সময় আপনার আমার মুখের ভাষা ভুলে যাবে।
সভায় হামদ, নাত, দেশের গান ও কবিতা আবৃত্তি করেন ব্র্যাডফোর্ড কালচারাল গ্রুপের শিল্পী সৈয়দ আজগর আলী, আলম মিয়া, দেলোয়ার ও কামরুল ইসলাম শামীম। পরিশেষে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সবার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

