খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, দেশে ফেরা অনিশ্চিত : যুক্তরাজ্য বিএনপির নিন্দা ও প্রতিবাদ
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ অক্টোবর ২০১৭
দেশ ডেস্ক : কুমিল্লার আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় একটি নৈশকোচে পেট্রোল বোমা হামলায় ৮ যাত্রী নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ৯ অক্টোবর সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ বেগম জেসমিন আরা বেগম এ আদেশ দেন। গ্রেফতারী পরোয়ারা জারির কারণে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ চলাকালে ২০১৫ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি ভোরে চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় একটি বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে বাসের ৮ ঘুমন্ত যাত্রী দগ্ধ হয়ে মারা যান, আহত হন ২০ জন। এ ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা ও চৌদ্দগ্রামের সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে প্রধান আসামি করে ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক মামলা করা হয়। এ দুটি মামলায় ৬২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে চলতি বছরের গত ৬ই মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলার প্রতিটিতে ৭৮ জনকে চার্জশিটভুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে উভয় মামলায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা চৌদ্দগ্রামের সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া চার্জশিটে ২০ দলীয় জোটের নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিঞা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ও সালাহউদ্দিন আহমেদকে হুকুমের আসামি করা হয়। বেগম খালেদা জিয়া এ দুটি মামলার চার্জশিটের ৫১নং আসামি। তদন্ত শেষে এ ২টি চার্জশিটে মামলার এজাহারভুক্ত ৮ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এদের মধ্যে চৌদ্দগ্রামের চান্দিশকরা গ্রামের সাহাব উদ্দিন পাটোয়ারী ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ও জগমোহনপুর গ্রামের সোহেল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।
বিক্ষোভ মিছিল: এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৪৬ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর এর প্রতিবাদে আদালত প্রাঙ্গণে ও নগরে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
যুক্তরাজ্য বিএনপির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার পূর্ব লন্ডনের বাডেট রোডের এক হলে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক মাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আজ্ঞাবহ আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ আজ সরকারের দুঃশাসন ও অত্যাচারের কবলে জর্জরিত। দেশে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে অবৈধ সরকার নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে। জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির শেষ আশ্রয়স্থল উচ্চ আদালত পর্যন্ত সরকারের রোষানল থেকে মুক্ত নয়। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতিকে গৃহবন্দী করে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে, যার পরিনতি শুভ হবে না।
প্রতিবাদ সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার এমএ সালাম, যুক্তরাজ্য বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুছ, কেন্দ্রীয় সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল হামিদ চৌধুরী, সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, উপদেষ্টা আলহাজ্ব তৈমুছ আলী, সহ সভাপতি মোঃ গোলাম রাব্বানি, গোলাম রাব্বানি সোহেল, উপদেষ্টা মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ, যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মামুন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ খান, কামাল উদ্দিন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নাসিম আহমেদ চৌধুরী, সহ সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান মাহতাব, আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামিম আহমেদ, খসরুজ্জামান খসরু, সিনিয়র সদস্য আলহাজ্ব সাদিক মিয়া, মিছবাহুজ্জামান সোহেল, যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক দেওয়ান মোকাদ্দেম চৌধুরী নিয়াজ, লন্ডন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবেদ রাজা, যুব বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হামিদ খান হেভেন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আবু নাসের শেখ, সহ দপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমেদ, সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট লিয়াকত আলী, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক খিজির আহমেদ, সহ ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সরফরাজ আহমেদ সরফু, সদস্য হাবিবুর রহমান, এজে লিমন, লুবায়েক আহমেদ চৌধুরী, রাসেল চৌধুরী, ইস্ট লন্ডন বিএনপির সভাপতি ফখরুল ইসলাম বাদল, নিউহাম বিএনপির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, লন্ডন নর্থ ওয়েস্ট বিএনপির সভাপতি সম্পাদক আলহাজ্ব এম এ সেলিম, কলচেস্টার বিএনপির সভাপতি মিসবা উদ্দিন, সেন্ট্রাল লন্ডন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, নিউহাম বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেবুল মিয়া, লন্ডন মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুর রব, তপু শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ চৌধুরী, তুহিন মোল্লা, মইনুল ইসলাম, বিএনপি নেতা শেখ ইসতাব উদ্দিন আহমেদ, মাওলানা শামিম আহমেদ, এমএ খলকু, আরিফ উদ্দিন, মাহমুদুল হাসান, আইনজীবি ফোরামের সভাপতি ব্যারিস্টার আবুল মনসুর শাজাহান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল হোসেন, সিনিয়র সহ সভাপতি মিসবাহ বিএস চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, জাসাস সভাপতি এমাদুর রহমান এমাদ, সিনিয়র সহ সভাপতি তরিকুর রশিদ চৌধুরী শওকত, সাধারণ সম্পাদক তাজবির চৌধুরী শিমুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, মহিলা দলের আহ্বায়ক ফেরেদৌস রহমান, সদস্য সচিব অঞ্জনা আলম, যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ লায়েক মোস্তাফা, যুবদল নেতা আব্দুল হক রাজ, আফজাল হোসেন, দেওয়ান আব্দুল বাসিত, সুরমান খান, শাহজাহান আলম, ডাক্তার মন্সুর আহমেদ, সুয়েদুল হাসান, মোজাহিদুল ইসলাম সুমন, মোশারফ হোসেন, শাকিল আহমেদ, মোঃ মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, আলকু মিয়া, কবির মিয়া, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা শরিফুল ইসলাম, মাহবুবুল আলম লাহিন, মুস্তাফিজুর রহমান ফেরদৌস, আতাউর রহমান, শাহ জামাল, শহিদুল ইসলাম স্বপন, জিয়াউর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম শিমু, জাহেদ তালুকদার, জামিল আহমেদ, জাহেদ আহমেদ, মইনুল ইসলাম সোহাগ, হারুন উর রশিদ, ফিরোজ আলম, লিটন মিয়া, খোকন মিয়া, রানা মিয়া, হিমেল আহমেদ, দিলাল আহমেদ, সেলিম উদ্দিন, খলিল রহমান, জাহেদ মানিক চৌধুরী, লাকি আহমেদ, ফজলুর রহমান পিনাক, ওয়াসিম উদ্দিন মানিক, সাদেক আহমেদ, খলিল রহমান, রাসেল শাহরিয়ার, দুলাল রহমান, জাসাস নেতা হাবিবুর রহমান বাবলু, মোঃ মামুন, শেখ সাদেক, শাজাহান আহমেদ, শহীদ আহমেদ, মোঃ জুয়েল, মুন্না খান, রেজওয়ান আহমেদ, শামিম আহমেদ, সাবেক ছাত্রদল নেতা শফিউল আলম মুরাদ, ইমতিয়াজ এনাম তানিম, মাহবুবুর রহমান, আমির আব্দুল্লাহ খান রনো, মাসুদ রানা, মাহমুদুল রহমান ইকবাল প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন, একটা হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, মিথ্যা, বানোয়াট মামলায় ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বিচলিত করা যাবে না। জাতীয়তাবাদী শক্তি জনগণের শক্তি, এ শক্তিকে ধ্বংস করা যাবে না। সরকার তার নিজেদের পোষা বিশেষ বাহিনী দিয়ে ২০১৫ সালে সারা দেশে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে যে তান্ডবলীলা চালিয়েছিল তা জাতি এখনো ভুলেনি। সেই সময় দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আওয়ামী বাকশালী পরিবারের লোকজনের সম্পৃক্ততা ছবিসহ প্রকাশিত হয়। কিন্তু সরকার হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা, বানোয়াট মামলা দায়ের করে। বক্তারা বলেন, বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে আওয়ামী বাকশালীদের সকল চক্রান্ত মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। বক্তারা অবিলম্বে মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

