গরুর মাংস খেতে আর বাধা নেই মুম্বইবাসীর
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫
কোনো বাধা ছাড়াই নির্বিঘ্নে গরুর মাংস খেতে পারবেন ভারতের মুম্বইয়ের বাসিন্দারা। সেখানে গরুর মাংস বিক্রির ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা মুম্বই হাইকোর্ট বাতিল করার পর সুপ্রিম কোর্টও ওই রায়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চান নি। এরপর কার্যত গরুর মাংস খাওয়ার ওপর সব ধরণের আইনি বাধা দূর হয়ে গেল। মাংস খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বরং বলেছে, সহনশীলতার মনন গাঁথা থাকতে হবে সমাজে। এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি। সোমবার মুম্বই হাইকোর্ট মাংস বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে দেয়। আজ থেকে মুম্বইয়ে ওই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবার কথা ছিল। হাইকোর্টের ওই আদেশটি বহাল রেখেছে সুপ্রিমকোর্ট। জৈন ধর্মাবলম্বীদের একটি সংগঠন হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে চ্যালেঞ্জ করে। পিটিশনকারীর যুক্তি, সমাজের একটি অংশের সংবেদনশীলতার কারণে মাংসের ওপর নিষেধাজ্ঞা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, এটি একটি সাময়িক আদেশ। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা আজই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই আপনি হাইকোর্টে যেতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টকে ৬ মাসের সময় দিয়ে বলেছিল ধর্মীয় উৎসবে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করা উচিৎ কিনা- তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। জৈনদের একটি উৎসব উপলক্ষে চারদিনের জন্য মাংস বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এর ফলে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিতর্কের জন্ম নেয়। মাংস বিক্রেতারা এ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বাতিল করতে হাইকোর্টে আবেদন জানায়। ব্যবসায়ীদের যুক্তি, এ নিষেধাজ্ঞা তাদের আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার জৈনদের উৎসবে মাংস বিক্রির ওপর প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু তখন নিষেধাজ্ঞা ছিল ২ দিনের। ১০ বছর পর সেটি ৪ দিনে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা প্রকৃতপক্ষে কখনোই কার্যকর করা হয়নি। কিন্তু এবার রাজ্য সরকার নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করে। গত সপ্তাহে মাংসের ওপর নিষেধাজ্ঞা ১ দিন কমিয়ে ফেলা হয়। মূলত ক্ষমতাসীন বিজেপি দেশজুড়ে গরুর মাংস ভক্ষণ নিষিদ্ধ করতে বেশি আগ্রহী। মুম্বইয়ে তারা ৪ দিন নয়, ৮ দিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চেয়েছিল। কিন্তু মুম্বইয়ে তাদের মিত্র শিবসেনা এ নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে। দলটির নিয়ন্ত্রিত পৌর সংস্থাই পরে একদিন কমায় নিষেধাজ্ঞা। পরে নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে হাইকোর্ট এক রায়ে বলেন, আমরা আইন অনুযায়ীই কাজ করেছি। সংবেদনশীলতা বা রাজনীতি বিবেচনায় নিই নি।