হার্টের রোগিদের জন্য সুখবর
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
দেশ ডেস্ক: রক্তের মাত্র একটি পরীক্ষা। এতেই নিশ্চিত হয়ে যেতে পারেন আপনার হৃৎপিন্ডের অবস্থা কি। এর এতে অনেক অর্থ ও চিকিৎসকদেরও সময় বাঁচবে। উপকার ভোগ করবে অসংখ্য মানুষ। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই একটি পরীক্ষা করানোর মাধ্যমে শুধু যুক্তরাজ্যেই বছরে ৮ লাখ পাউন্ড বাঁচানো সম্ভব। আরও বলা হয়েছে, মানুষের হার্টের অবস্থা জানতে বা কেউ হার্ট এটাকে আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন কিনা তা নির্ধারণে এখন যে পরীক্ষা করা হয় নতুন এই পরীক্ষাটি তার চেয়ে অনেক অনেক সঠিক তথ্য দেয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন স্কাই নিউজ।
এতে বলা হয়েছে, যারা বুকের ব্যথা নিয়ে এ পরীক্ষা করিয়েছেন তাদের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি হার্ট এটাক থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এসব রোগি যখন চিকিৎসকদের কাছে গিয়েছেন তখন তাদের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। এর তিন ঘন্টা পরে আবার পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে হার্টের মাংসগুলোর কতটা ক্ষতি হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমানে হার্ট এটাকের পরীক্ষা করা হয় বায়োমারকার ব্যবহার করে। এর মধ্যে রয়েছে কার্ডিয়াক ট্রোপোনিন। যদি দেখা যায় কার্ডিয়াক ট্রোপোনিন লেভেল সনাক্ত করতে পারছে না তাহলে ধরে নেয়া হয় ঝুঁকি কম এবং এ অবস্থায় রোগিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু শতকরা ৮৫ ভাগ রোগিকেই পাওয়া যায় মধ্যবর্তী ঝুঁকিতে থাকা হিসেবে। এমনটা হলে তাদেরকে রাত থাকতে হয় হাসপাতালে এবং আবারও রক্তের পরীক্ষা করাতে হয়। কিন্তু কিংস কলেজ লন্ডনের একদল বিজ্ঞানী আরেকটি বায়োমেটার অর্থাৎ রক্ত পরীক্ষার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। একে বলা হয় কার্ডিয়ান মাইয়োসিন বাইন্ডিং প্রোটিন সি (সিএমওয়াইসি)। তারা দাবি করেছেন, হার্টের মাংসপেশি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা আরো বেশি স্পষ্ট করে তুলে ধরে এ পরীক্ষা।
ওই বিজ্ঞানীরা বলেছেন, হার্ট এটাকের পর রক্তে দ্রুত বাড়তে থাকে সিএমওয়াইসির মাত্রা। ট্রোপোনিনের চেয়ে দ্রুত বাড়ে তা। নতুন এই রক্ত পরীক্ষা পদ্ধতি যুক্তরাজ্যজুড়ে আগামী ৫ বছরে ব্যবহার করা হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অন্য পরীক্ষার তুলনায় এই পরীক্ষায় অধিক দ্রুত হার্ট এটাক সনাক্ত করা যাবে। বৃটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে সুইজারল্যান্ড, ইতালি ও স্পেনে কমপক্ষে ২ হাজার মানুষের ওপর এ পরীক্ষা চালানো হয়েছে। তারপরই তা প্রকাশ করা হয়েছে সারকুলেশন জার্নালে। এতে বলা হয়েছে, যেসব রোগির ক্ষেত্রে এই নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে পরীক্ষা চালানো হয়েছে তাতে দেখা গেছে একই সময়ে দ্বিগুন রোগির পরীক্ষা করা সম্ভব এবং তাদের হার্ট এটাক হয় নি এটা বলে দেয়া যায়। যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর কমপক্ষে ৭৮০০ রোগির হার্ট এটাকের পরীক্ষাই করে। সেখানকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন এই পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যবহার করা হলে বছরে ৮ লাখ পাউন্ড বাঁচানো সম্ভব। এতে রোগি ভর্তির সংখ্যা কমে যাবে। সিট বুক হয়ে থাকবে না। নতুন গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ডাক্তার টম কাইয়ের।