শিরিয়া খাতুনের পর এবার র্যাচল সন্ডার্স’র পদত্যাগ : টাওয়ার হ্যামলেটস লেবারে অস্থিরতা
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ আগস্ট ২০১৭
o রহস্যজনক কারণে লেবার পার্টি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন অনেক সম্ভাবনাময় রাজনীতিক
দেশ রিপোর্ট: টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের তিন ডেপুটি মেয়রের মধ্যে কাউন্সিলার শিরিয়া খাতুন নির্বাহী মেয়র জন বিগসের বিরুদ্ধে বৈষম্যমুলক আচরণের অভিযোগ এনে ইতোপূর্বে পদত্যাগ করেছিলেন। এবার আকস্মিকভাবে পদত্যাগ করলেন অপর ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার র্যাচল সন্ডার্স। গত ৮ আগস্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে ডেপুটি মেয়রের পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। একই সাথে তিনি কেবিনেটের পদ থেকেও পদত্যাগ করেছেন।
কাউন্সিলার র্যাচল সান্ডার্স পদত্যাগের কারণ হিসেবে বলেছেন, নতুন চাকরিতে যোগদানের কারণে ডেপুটি মেয়র হিসেবে সময় দেয়া এবং কাজ চালিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না, যদিও একজন রাজনীতিক হিসেবে সবসময়ই জনগনের জন্য কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। একই সাথে তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। এ নিয়ে বর্তমান ও সাবেক অনেক কাউন্সিলার লেবারের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন। তারা নিজেদের ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা বলে লেবারের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বললেও এর পেছনে রহস্য খুঁজছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকদের মতে, এমনিতে রাজনীতি ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা খুব কম। দলের মধ্যে সুস্থ রাজনীতির চর্চা থাকলে কেন তাঁরা রাজনীতি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেবেন। একজন লেবার নেতা বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটস লেবারের অভ্যন্তরে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। এখানে সুস্থ রাজনীতি চর্চার সুযোগ একেবারেই কম। তাই একে একে যোগ্য রাজনীতিকেরা রাজনীতি থেকে সরে দাড়াচ্ছেন।
ইতোপূর্বে যাঁরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা হলেন, মেয়র জন বিগসের কেবিনেটের ওয়ার্ক এন্ড ইকোনমি গ্রোথ লিড মেম্বার বো ওয়েস্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যশোয়া প্যাক, এডুকেশন এন্ড চিলড্রেন সার্ভিস লিড মেম্বার বেথনাল গ্রীন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এমি ওয়াইটলক গিবস, সেন্ট পিটার্স ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ক্লেয়ার হ্যারিসন এবং মেয়রের উপদেষ্টা ব্ল্যাকওয়েল এন্ড কিউবিট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ডেভ চেস্টারটন। এই চারজনের বাইরে আরেকজন বর্তমান কাউন্সিলারের মনোনয়ন এখনো নিশ্চিত হয়নি বলে জানা গেছে। তিনি হচ্ছেন কাউন্সির খালিছ উদ্দিন আহমদ। জন বিগস মেয়র হবার পর কাউন্সিলর খালিছ স্পিকার নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে মেয়রের সঙ্গে তার দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মে মাসে নতুন কেবিনেট গঠনের সময় কাউন্সিলার খালিছ উদ্দিন স্পিকার হিসেবে তার সর্বশেষ বক্তব্যে মেয়রের উপর পরোক্ষভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া দলীয় কিছু কাউন্সিলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার পার্টি থেকে সাময়িক সময়ের জন্য তাঁর মেম্বারশীপ স্থগিত হলেও পরবর্তীতে ওই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় তাঁর সদস্যপদ বহাল রেখে লন্ডন লেবার পার্টি। এছাড়া সাবেক কাউন্সিলর আব্দাল উল্লাহর মনোনয়ন আবেদন মৌখিকভাবে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর তিনি অ্যাপিল করেছেন বলেও জানা গেছে। অন্যদিকে সাবেক কাউন্সিলর হেলাল আব্বাস ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীতার জন্যে আবেদনই করেননি বলে জানা গেছে।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল ব্রিটবাংলা সুত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে মধ্যবর্তী পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগেই নমিনেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল টাওয়ার হ্যামলেটসে। মোটামুটি শর্টলিস্টও হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ পার্লামেন্ট নির্বাচনের কারণে সব কিছু স্থগিত হয়ে যায়। আগস্ট মাস থেকে আবার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। কাউন্সিলার প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রায় ১৫০ জন আবেদন করেন বলে ওই সুত্রে জানা গেছে। এর মধ্য থেকে আগস্টের ভেতরে শর্টলিস্ট সম্পন্ন করবে স্থানীয় লেবার গ্রুপ। তারপর তা পাঠানো হবে লন্ডন লেবারের কাছে। সেখান থেকে পুরো প্রক্রিয়া শেষে চুড়ান্ত হয়ে আসবে ৪৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম। তবে এই তালিকায় ইম্পোজ বা আরোপ করার ক্ষমতা আছে নির্বাহী মেয়র জন বিগসের। পছন্দ এবং অপছন্দের তালিকাও লন্ডন লেবারের কাছে পাঠাতে পারেন মেয়র জন বিগস।