কাউন্সিলার খালিছ উদ্দিনকে সাসপেনশনের নেপথ্য কারণ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০১৭
দেশ রিপোর্ট : টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক স্পীকার লেবার কাউন্সিলার খালিস উদ্দিনের দলীয় সদস্যপদ স্থগিত করার প্রায় ৮ মাস পর দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে। কিন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিলো? কারা সে অভিযোগ দাখিল করেছিলেন? অভিযোগের নেপথ্য কারণ কী- সবকিছুই অজানা ছিলো। কাউন্সিলার খালিছ উদ্দিনও এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। তবে সাপ্তাহিক দেশ-এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। লন্ডন লেবার পার্টির রিজিওনাল অর্গানাইজার আলী ক্রাফট-এর কাছে কাউন্সিলার শিরিয়া খাতুনের লেখা একটি ইমেইল বার্তা ফাঁস হয়েছে। উক্ত ইমেইল থেকে প্রতীয়মান হয়েছে, কাউন্সিলার খালিস উদ্দিনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ছিলো সাজানো।
আগামী মেয়র নির্বাচনে জন বিগসের প্রার্থী হওয়া, না হওয়া নিয়ে গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হ্যা-না ভোটাভূটিতে (ট্রিগার ব্যালট) মুখ্য ভুমিকা রাখেন কাউন্সিলার খালিছ উদ্দিন। আর এর কিছুদিনের মধ্যে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি তাঁর দলীয় সদস্যপদ স্থগিত ঘোষণা করে। তখন উড়ো সংবাদে জানা যায়, কাউন্সিলার খালিছ উদ্দিন একজন মহিলা কাউন্সিলারকে অপমান করেছেন অথবা হুমকী দিয়েছেন-এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁর সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু কারা অভিযোগ করেছিলেন তা বেরিয়ে এসেছে সাবেক ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার শিরিয়া খাতুনের ওই ইমেইল বার্তায়।
গত ২৩ মে কাউন্সিলার শিরিয়া খাতুন লন্ডন লেবার পার্টির রিজিওনাল অর্গানাইজার আলী ক্রাফট এর কাছে প্রেরিত ইমেইল বার্তায় লিখেন, “কাউন্সিল খালিস উদ্দিনকে আমি জিজ্ঞেস করেছি যে, তিনি কি টাওয়ার হ্যামলেটস লেবারের ট্রেজারার আসমা ইসলাম ও কাউন্সিলার সাবিনা আক্তারের কাছে আমাকে হুমকী দিয়ে কোনো কথা বলেছেন? জবাবে খালিস উদ্দিন বলেছেন, তিনি কখনো আসমা ইসলাম বা কাউন্সিলার সাবিনা আক্তারের কাছে আমাকে (শিরিয়া খাতুন) হুমকী দিয়ে কোনো কথা বলেন নি। আমিও (এ ব্যাপারে) তাঁকে বিশ্বাস করি। আমি নিশ্চিত নই, ওই দুইজন কেন আমাকে বলেছিলেন কাউন্সিলার খালিছ উদ্দিন আমাকে হুমকী দিয়েছেন। বিষয়টি আপনিই তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন। আমি এই ঘটনায় জড়াতে চাই না।”
উক্ত ইমেইল থেকে প্রতীয়মান হয়, টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার পার্টির ট্রেজারার আসমা ইসলাম ও কাউন্সিলার সাবিনা আক্তার অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন যে, কাউন্সিলার খালিছ উদ্দিন সাবেক ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার শিরিয়া খাতুনকে হুমকী দিয়েছেন। আর এরই প্রেক্ষিতে কাউন্সিলার সিরিয়া খাতুন লেবার পার্টির ন্যাশনাল কমিটিতে অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বছরের ৪ নভেম্বর তার সদস্যপদ স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এরপর দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস জাতীয় নির্বাহী কমিটি (এনইসি) তদন্ত শেষে অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হওয়ায় ২৭ জুন তাঁর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে সাপ্তাহিক দেশ থেকে কাউন্সিলার খালিছ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আইনি বাধ্যবাধতার কারণে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে কারা, কী অভিযোগ করেছিলেন তা আপাতত: বলতে পারবেন না। তবে অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হওয়ায় লেবার এনইসি সানপেনশন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে দলীয় সদস্যপদ সাসপেন্ড করে কমিউনিটিতে সম্মানহানী ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এনইসি’র কাছে লিখিত দাবী জানিয়েছি। আমি আশাবাদী, এনইসি মিথ্যা অভিযোগকারী ও এর নেপথ্য নায়কদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।