‘আটক আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বা মুক্তি দিন’
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০১৫
আইনজীবী আসাদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে অভিযোগ গঠন বা মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতা মতিউর রহমান নিজামির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী দলের মধ্যে অন্যতম আসাদ উদ্দিন। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত সিনিয়র দুই জামায়াত নেতার আপিল ও রিভিউ শুনানি হওয়ার দু’সপ্তাহ আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, আপিলের আগ দিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীকে ভীতিপ্রদর্শন ত্রুটিপূর্ণ বিচারপ্রক্রিয়ার ওপর আরেকটি আঘাত। ২২শে অক্টোবর আসাদ উদ্দিন সিরাজগঞ্জে তার নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় আটক হন। এক প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী, বেলা আড়াইটার দিকে তিনি যে বাসে করে যাচ্ছিলেন, যমুনা সেতু পার করার পর পুলিশ সে বাসটি থামিয়ে দেয়। উর্দি পরিহিত এবং সাদা পোশাকের দু ধরনের পুলিশই ছিল। নিজেদের গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা আসাদ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা তার পরিবারকে অবহিত করলে তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করে। পুলিশ সে আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। আসাদ উদ্দিনকে সিরাজগঞ্জ থানার গোয়েন্দা বিভাগে আটক রাখা হয়েছে তার পরিবারের কাছে এমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাদের হেফাজতে আসাদের থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে। একইদিন সন্ধ্যায় পুলিশ আসামিপক্ষের আরেকজন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরের বাড়িতে অভিযান চালায়। শিশির বাড়িতে না থাকায় তারা চলে যান। কিছুক্ষণ পর সাদা পোশাকের পুলিশ ডিবি পরিচয়ে আবার শিশিরের বাড়িতে ঢুকে তার ড্রাইভারকে আটক করে। তাকে ছাড়ার আগে কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ২৫শে অক্টোবর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসাদ উদ্দিনকে হাজির করা হয়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও সময় প্রার্থনা করে বলে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ‘সরকারকে উৎখাত করতে এবং যুদ্ধাপরাধ মামলা ব্যহত করার’ পরিকল্পনা করছে। ২৬শে অক্টোবর ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসাদ উদ্দিনের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেছেন, আসাদ উদ্দিনের গ্রেপ্তার এবং শিশিরের বাড়িতে অভিযান অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ঠুনকো অজুহাতে এ গ্রেপ্তার আর অভিযান যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের ভীতি প্রদর্শনের প্রচেষ্টা বলে প্রতীয়মান হয়। এটা আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন। তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ শুনানির আগে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের ওপর সাম্প্রতিক এসব হামলা যুদ্ধপরাধ বিচার প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর বড় ধরনের আঘাত। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে আসছি। তবে সেটা সুষ্ঠু বিচারপ্রক্রিয়া বিসর্জন দিয়ে আসা উচিত নয়।