যুক্তরাজ্য আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ আর নেই
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ আগস্ট ২০২৫
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (২৩ আগস্ট) লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। পরিবার জানিয়েছে, তাঁর জানাজা ও দাফনের সময়সূচি পরে জানানো হবে।
১৯৪১ সালের ২৬ জানুয়ারি বরিশালের কতোয়ালী থানার চানপুরা ইউনিয়নের সারুখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ২০১১ সাল থেকে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই মেয়ে, নাতি-নাতনি ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শিক্ষাজীবন থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত হন সুলতান শরীফ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ইকবাল হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৬২-৬৩ সালের আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, হোসেন সোহরাওয়ার্দীর মুক্তি আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি আন্দোলন এবং শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট বাতিল আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ছিলেন।
১৯৬৩ সালে লন্ডনে ছাত্রনেতা হিসেবে সামনের সারিতে আসেন তিনি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। প্রবাসী বাঙালিদের নিয়ে বিশ্বজনমত গড়ে তোলেন এবং এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন সুলতান মাহমুদ শরীফ। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা প্রচার, ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রতিবাদ, পাকিস্তান হাইকমিশন ঘেরাও, কালো পতাকা উত্তোলনসহ অসংখ্য আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধু লন্ডন সফরে গেলে সুলতান শরীফ তাঁর পাশে সার্বক্ষণিক অবস্থান করেন। পরবর্তীতে লন্ডন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন তিনি।
১৯৭০ সালে ইয়াহিয়া খানের লন্ডন সফরকালে ক্লারিজস হোটেলের সামনে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সংগঠনে নেতৃত্ব দেন সুলতান শরীফ। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশে ফিরে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সেক্রেটারিয়েটের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা-দুজনেরই কাছের মানুষ ছিলেন তিনি।
প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সুলতান মাহমুদ শরীফ ছিলেন দিকনির্দেশক ও কান্ডারি। আমৃত্যু তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।

