বিডিআর বিদ্রোহ : হত্যা মামলায় খালাসের আড়াই শতাধিক জওয়ানের জামিন
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জানুয়ারি ২০২৫
দেশ ডেস্ক:: বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া আড়াই শতাধিক জওয়ান বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জামিন পেয়েছেন। আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের (প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) বিচারক ইব্রাহীম মিয়া এ আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় হত্যা মামলায় ২৭৮ জনকে খালাস দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। এর মধ্যে ৬৯ জনের খালাসের রায় চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর মধ্যে ২০ জনের খালাসের রায় বাতিল হয়। এ হিসাব অনুযায়ী, বিচারিক ও উচ্চ আদালত থেকে হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া আসামির সংখ্যা ২৫০-এর বেশি। যারা উভয় আদালত থেকে খালাস পান, তাদের জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদরদপ্তরে নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে হত্যা মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। মামলাটি চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য এখন আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায়। অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় বিচারিক আদালতে এখনও সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। এ মামলার সাক্ষী ১ হাজার ৩৪৪ জন। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৭৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি) সদরদপ্তর ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহ হয়। সেদিন বিডিআরের কয়েকশ সদস্য পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালান। প্রায় দুই দিনব্যাপী চলা বিদ্রোহে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয় ৮৫০ জনকে। বিচারিক আদালত ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এ মামলার রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। খালাস পান ২৭৮ জন। রায় ঘোষণার আগেই চার আসামি মারা যান।
পিলখানা হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। এতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন ১৮৫ ও বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় ২২৮ জনকে। খালাস পান ২৮৩ জন। হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ আসামি মারা গেছেন।