আপনার পাসপোর্টের স্টিকার ভিসা, ই-ভিসায় রূপান্তর করলে যে সুবিধা পাবেন?
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশ ডেস্ক, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪: যুক্তরাজ্য সরকার পাসপোর্টের পাতায় লাগানো স্টিকার ভিসা, বায়োমেট্রিক রেসিডেন্ট পারমিট (বিআরপি) ও বায়োমেট্রিক রেসিডেন্ট কার্ডকে (বিআরসি) ই-ভিসা তথা অনলাইন ভিসায় রূপান্তর করার জন্য জোরালো প্রচারনা অব্যাহত রেখেছে ।
ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা ই-ভিসায় রূপান্তরের ব্যাপারে মানুষকে উৎসাহিত করছেন । ই-ভিসা হচ্ছে, একজন ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসের অনলাইন রেকর্ড।
হোম অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৩০ লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে বায়োমেট্রিক রেসিডেন্ট পারমিটকে ই-ভিসায় রূপান্তরিত করেছে ।
সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, ইতিপুর্বে স্টিকার ভিসা অথবা বায়োমেট্রিক রেসিডেন্ট পারমিটকে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ই-ভিসায় রূপান্তরের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিলো । তবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার সম্প্রতি এক ঘোষণায় সেই সময়সীমা আগামী বছরের ৩১ মার্চ (২০২৫) পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন । অর্থাৎ, যাদের পাসপোর্টে স্টিকার ভিসা রয়েছে ও অথবা বিআরপি কার্ড হোল্ড করেন তারা আগামী মার্চ পর্যন্ত এই ভিসা দিয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন।
বাংলাদেশি লেডিস ইন দ্য ইউকে ও অল পাকিস্তান উইমেনস অ্যাসোসিয়েশন হচ্ছে ইংল্যান্ডের এমন দুটো কমিউনিটি সংগঠন যারা কমিউনিটির মানুষকে ই-ভিসায় রূপান্তরিত হতে সহায়তা করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যাতে কেউ পিছিয়ে না পড়ে। অল পাকিস্তান উইমেনস অ্যাসোসিয়েশনের সীমি আওয়ান বলেছেন, “আমাদের কমিউনিটির জন্য এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ায় একসাথে কাজ করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । একটি সংগঠন এবং একটি কমিউনিটি হিসাবে আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, এই কাজে যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন আমরা তাদের পাশে রয়েছি।
পূর্ব লন্ডনের বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ মুনশাত চৌধুরী বলেন, যাদের বিআরপি অথবা বিআরসি কার্ড রয়েছে, তারা ইতোমধ্যে টেক্সট অথবা ইমেল পেয়েছেন । এই ইমেইলে পুরোপুরি নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে যে, আপনি কীভাবে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগে ই-ভিসায় রূপান্তর করবেন।
যাদের পুরনো ভিসা ডকুমেন্ট রয়েছে, যেমন পাসপোর্টে স্ট্যাম্প বা স্টিকার, যার মেয়াদ নেই (প্রায়ই ‘লিগ্যাসি ডকুমেন্ট’ বলা হয়), তাদেরও ই-ভিসায় রূপান্তর করার সুপারিশ করা হয়েছে । এ ব্যাপারে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে বা কম্পিউটার না থাকলে, অনলাইনে, ফোনে অথবা সরাসরি সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে । আপনার কোনো ঘনিষ্টজন www.gov.uk/eVisa ওয়েবসাইট ভিজিট করে আপনাকে সহযোগিতা করতে পারবেন।
ই-ভিসায় রূপান্তরের প্রধান ৫টি সুবিধা:
১. তাৎক্ষণিক এবং যেকোনো সময় পাওয়া যায় : আপনার পাসপোর্টের পাতায় লাগানো স্টিকার ভিসাটি ই-ভিসায় (অনলাইন ভিসায়) রূপান্তরিত করলে, আপনি যেকোনো ডিজিটাল ডিভাইস থেকে আপনার ভিসার তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারবেন। অতিরিক্ত কাগজপত্র বহনের প্রয়োজন হবে না । ই-ভিসা হারানো বা চুরি হওয়ার ঝুঁকিও নেই এবং এটি তৃতীয় পক্ষ যেমন আপনার চাকরিদাতা অথবা বাসা মালিকের সাথে সহজে শেয়ার করা যাবে।
২. সহজ ভ্রমণ: যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ আরও সহজ হবে । ইউকে বোর্ডার ফোর্স এবং এয়ারলাইন্স, রেল বা ফেরী অপারেটররা ই-ভিসা হোল্ডারের ইমিগ্রেশন ইলেকট্রনিকভাবে যাচাই করতে পারবে, প্রক্রিয়া দ্রুত হবে এবং স্ট্যাম্প বা স্টিকার নিয়ে বিভ্রান্তি থাকবে না।
৩. উন্নত নিরাপত্তা: ই-ভিসা অনলাইনে নিরাপদে সংরক্ষিত থাকে । এটি পাসপোর্টের স্ট্যাম্প বা স্টিকারের চেয়ে বেশি নিরাপদ।
৪. সহজ আপডেট এবং নবায়ন : ই-ভিসা ব্যবহার করে আপনি ইউকে ভিসা এবং ইমিগ্রেশন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সহজেই আপডেট করতে পারবেন।
৫. বিনামূল্যে রূপান্তর- এতে আপনার ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসে কোনো পরিবর্তন হয়না: ই-ভিসা শুধুমাত্র আপনার অভিবাসন অবস্থার একটি ইলেকট্রনিক রেকর্ড । এটি আপনার অভিবাসন অবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনে না।