নবম ‘ভিজিট মাই মস্ক’ কর্মসূচি উদযাপিত : মুসলিম-অমুসলিমের পদচারণায় মুখরিত ছিলো ইস্ট লন্ডন মস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ অক্টোবর ২০২৪
লন্ডন, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪:: নানা ধর্ম ও বর্ণের বিপুল সংখ্যক মুসলিম-অমুসলিমের অংশগ্রহণে যুক্তরাজ্যে নবম বারের মতো উদযাপিত হলো ‘ভিজিট মাই মস্ক’ কর্মসূচি । ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার যুক্তরাজ্যের দুই শতাধিক মসজিদ অমুসলিম নারী পুরুষ ও শিশু কিশোরদের জন্য খুলে দেওয়া হয় ।
ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইস্ট লন্ডন মসজিদে এবারের ‘ভিজিট মাই মস্ক’-এর প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো ইসলামে পরিবেশ সুরক্ষার গুরুত্ব। সারাদিনই দলে-দলে আসতে থাকেন বিপুলসংখ্যক খৃস্টান, ইহুদীসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ । তাঁরা মসজিদের ভেতর ঘুরে দেখেন । মসজিদ ও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা নিয়ে ফিরে যান তারা।
অন্যান্য মসজিদের মতোই ইস্ট লন্ডন মসজিদ সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত খোলা ছিলো । এলএমসি’র দ্বিতীয়তলায় ছিলো কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন ফলমূল ও পরিবেশ বিষয়ক নানা প্রদর্শনী । দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিলো নন-মুসলিমদেরকে মসজিদের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখানো, জামাতে নামাজ পড়ার দৃশ্য দেখানো, মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে প্রদর্শনী, চিলড্রেন এক্টিভিটি কর্ণার ইত্যাদি।
দুপুর ১২টায় এলএমসি দ্বিতীয়তলায় অনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় দিনব্যাপী কর্মসূচির । মারিয়াম সেন্টারের ম্যানেজার সুফিয়া আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী পর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ইস্ট লন্ডন মসজিদের সিইও জুনায়েদ আহমদ ও প্রজেক্ট এনগেইজডমেন্ট অফিসার নেইথান গোবিন্স মুসা ।
জুনায়েদ আহমদ বলেন, “ইসলাম বলে আমরা এই পৃথিবীর রক্ষনাবেক্ষনকারি । তাই এই বছরের ভিজিট মাই মস্ক কর্মসুচি আমাদেরকে ইসলাম কীভাবে পরিবেশ সুরক্ষায় উৎসাহিত করে- তা নিয়ে আলোচনা করার একটি চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে ৷ তিনি বলেন, কুরআন ও হাদিস আমাদেরকে কীভাবে টেকসই জীবনযাপনে উৎসাহিত করে- সেই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে আমরা আমাদের কমিউনিটিকে স্বাগত জানাই। যুক্তরাজ্যের একটি বৃহত্তম মসজিদ হিসাবে আমাদের দায়িত্ব শুধুমাত্র ধর্মীয় কেন্দ্র হিসাবে কাজ করা নয়, পরিবেশ সহ বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধিতে নেতৃত্ব দেওয়াও আমাদের দায়িত্ব।”
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেন (এমসিবি) ভিজিট মাই মস্ক কর্মসূচি চালু করে । প্রথম বছরই নন-মুসলিমদের পক্ষ থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। ওই বছর যুক্তরাজ্যের ২০টি মসজিদ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে । পরের বছর ২০১৬ সালে দ্বিতীয় অপেন ডে’তে অংশগ্রহণ করে ৮০টি মসজিদ। ২০১৭ সালে তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে দেড়-শতাধিক মসজিদ । এরপর ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সারাদেশের প্রায় ১৮০টি মসজিদে ব্যাপকভাবে এই কর্মসূচি পালিত হয় । তবে কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সালে ভার্চূয়ালি আয়োজন করা হলেও ২০২১ সালে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি । এরপর ২০২২ সাল থেকে নিয়মিত উদযাপিত হয়ে আসছে।