আল-মিজান স্কুল ও লন্ডন ইস্ট একাডেমির ১২তম হুফফাজ গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ৭ হাফিজকে সনদ প্রদান
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩
ইস্ট লন্ডন মসজিদ পরিচালিত আল-মিজান স্কুল এন্ড লন্ডন ইস্ট একাডেমি থেকে এ বছর ৭জন শিক্ষার্থী পবিত্র কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করেছেন । এ নিয়ে গত ১৭ বছরে ৯৭ জন শিক্ষার্থী পবিত্র কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করলেন । হিফজ সম্পন্নকারী ছাত্রদের নিয়ে ২৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লন্ডন মুসলিম সেন্টারের নিচতলায় অনুষ্ঠিত হয় বারোতম বার্ষিক হুফফাজ গ্রাজুয়েশন সিরিমনি । অনুষ্ঠানে হাফিজদের পাগড়ি পরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি উপহার হিশেবে আইপ্যাড ও ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইস্ট লন্ডন মসজিদের ইমাম ও খতীব শায়খ আব্দুল কাইয়ূম, সিনিয়র ইমাম হাফিজ মাওলানা আবুল হোসাইন খান, লন্ডন ইস্ট একাডেমির প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ বদর ও গভর্ণিং বডির চেয়ারম্যান হোসাইন শিপার। ভিডিও লিংকের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন ফজর ক্যাপিটাল-এর সিইও ইকবাল খান। এতে অন্যান্যের মধ্যে ইস্ট লন্ডন মসজিদের চেয়ারম্যান আইয়ুব খান উপস্থিত ছিলেন।
লন্ডন ইস্ট একাডেমির ছাত্র তালহা আমিন ও মাসরুর উসায়েদের যৌথ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন লন্ডন ইস্ট একাডেমির ছাত্র জাফর মোহাম্মদ।
সনদপ্রাপ্ত সাতজন হাফিজ হলেন- আব্দুল্লাহ মাহদী, তাহসিন ইসহাক, মুয়াজ আলী, উজায়ের মিয়া, জহির হাজ্জী, ইয়াহইয়া আফরাহ ও ইসমাইল আব্দুল্লাহ আহমদ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, যারা হাফিজ হলেন তাদের জন্য আজকের দিনটি অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের, কারণ তারা পবিত্র কুরআন মুখস্থ করে একটি বিশাল কাজ সম্পন্ন করেছেন। বক্তারা ছাত্রদেরকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, তোমরা প্রতিদিনই এমন কিছু করবে যাতে তোমাদের মা-বাবা গর্ববোধ করেন । আর মা-বাবাও এমন কিছু করবেন যা সন্তানদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয় । তাঁরা বলেন, কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে ছাত্ররা একটি বিশাল সম্পদ অর্জন করলো। এখন এই সম্পদ ধরে রাখতে কঠোর অধ্যাবসায় প্রয়োজন । মনে রাখতে হবে, কোনো কিছু অর্জন যতটা কঠিন, তা ধরে রাখা আরো কঠিন । বক্তারা অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
স্কুলের গভর্ণি বডির চেয়ারম্যান হোসেন শিপার বলেন, আমি আশাবাদী আজ যারা পবিত্র করআনের হাফিজ হলেন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করে আবার ফিরে আসবে এবং কমিউনিটি, মসজিদ এবং স্কুলকে কিছু ফিরিয়ে দিবে।
ইমাম আব্দুল কাইয়ূম তাঁর বক্তব্যে হাফিজদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এখন তোমাদেরকে কুরআনের প্রতিটি শব্দ বুঝতে হবে। তোমরা একেকজন ইসলামিক স্কলার হবে। তোমরা হাফেজ হওয়ার পাশাপাশি আলেম হবে । তোমরা অন্যদের চেয়ে ভিন্ন, কারণ তোমাদের অন্তরে রয়েছে কুরআন । তোমরা মহামহিম আল্লাহ তায়ালার পবিত্র গ্রন্থ বুকে লালন করছো । হাফিজ হওয়ার পর আলেম হলে পবিত্র কুরআনের প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করা যায়। তিনি বলেন, আজকের হাফেজরা হবে ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া । অর্থাৎ নবীর উত্তরসূরী। নবীর উত্তরসুরীদের মর্যাদা অনেক বেশি। তিনি বলেন, উট মরুভুমিতে ছেড়ে দিলে যেভাবে চলে যেতে পারে, তেমনি কুরআনের হাফিজ হওয়ার পর তেলাওয়াত ছেড়ে দিয়ে কুরআনও তোমাদের ছেড়ে চলে যেতে পারে । তাই কুরআন সবসময় পড়তে হবে । অন্তরে ধরে রাখতে হবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, তোমরা যখন ইউনিভার্সিটিতে যাবে তখন ইসলামিক সোসাইটির সাথে সম্পৃক্ত থাকবে। তারা ভার্সিটিতে বিভিন্ন ইসলামিক টক আয়োজন করে এবং শুক্রবারে জামাতের ব্যবস্থা করে। তাহলে তোমরা ইসলাম থেকে ছিটকে পড়বে না । তোমরা তোমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে কুরআনের সাথে মিশিয়ে দেবে । নতুবা শয়তান তোমাদের বিপথে নিয়ে যাবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি