টাওয়ার হ্যামলেটসে বাংলা ভাষা রক্ষায় করণীয় কী?
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জানুয়ারি ২০১৯
মোহাম্মদ আবু হোসেন:
গত কয়েক বছরে অধিকাংশ সেকেন্ডারি স্কুল থেকে বাংলা ভাষা চর্চা বন্ধ হয়ে গেছে। ছেলে-মেয়েরা বাংলার সাথে সাথে বাংলায় জিসিএসই ও এ লেভেল পড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
গত প্রায় ৩৪ বছর ধরে টাওয়ার হামলেটস অত্যন্ত কৃতীত্বের সাথে কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিসের (সিএলএস) আওতায় বাংলা, চাইনিজ, ম্যান্ডারিন, এরাবিক, উর্দু ও লিথুনিয়ান ভাষা পড়ানো হয়। দুঃখের বিষয়, ২০১৬ সালে টাওয়ার হ্যামলেটস কর্তৃপক্ষ ফান্ডিং কাটের অজুহাতে জিসিএসই এবং এ লেভেলে বাংলা ভাষা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করে দেয়।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয, সবচেয়ে বেশি বাংলা ভাষাভাষী অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসে প্রায় ২২ জন বাঙালি কাউন্সিলর থাকা সত্ত্বেও কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ এই কমিউনিটি ল্যাংগুয়েজ সার্ভিসকে রি-মডেলিং এর নামে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যদি সত্যি সত্যি বাংলা ভাষা ও অন্যান্য ভাষার কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এ লজ্জা টাওয়ার হ্যামলেটসের সকল বাঙালির।
অদ্য ১৪ই জানুয়ারি টাওয়ার হামলেটস বাজেট স্ক্রুটনি ক্যাবিনেট মিটিংয়ে বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশন ও বিভিন্ন কমিউনিটি ওরগানাইজেশন সম্মিলিতভাবে কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ বাজেট কর্তনের বিরুদ্ধে প্রস্তাবনা পেশ করেন।
উক্ত প্রস্তাবনায় আমি (টিচার্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মোঃ আবু হোসেন) আসন্ন বাজেটে কমিউনিটি ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিসে ফান্ডিং কর্তনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরি। এ সময় চায়নিজ কমিউনিটির পক্ষে ওয়েন্ডি ও বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জনাব আতিক মিয়া প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে যুক্তি তুলে ধরেন।
ক্যাবিনেট মিটিংয়ে কাউন্সিলর আবদাল উল্লাহর সভাপতিত্বে ও কো চেয়ার মার্ক ফ্রান্সিস, কাউন্সিলর সফিয়া আলম ও কাহার চৌধুরীর প্রতিপক্ষ মেয়র জন বিগস, ডাইরেক্টর জুটিত সেন্ট জৌন ও কেবিনেট মেম্বার আমেনা আলীকে প্রশ্নবানে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন। কেবিনেট মিটিংয়ে উত্তপ্ত বিতর্কের পর কেবিনেট মেম্বার, অভিভাবক ও স্টেকহোলডারদের সাথে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৬টায় কমার্শিয়াল রোডে লন্ডন এন্টারপ্রাইজ স্কুলে বাংলাদেশ টিচার্স এসোসিয়েশন এবং কমিউনিটির সকল সংগঠকে নিয়ে এক বিরাট জনসভা আহ্বান করা হয়েছে। তাছাড়া ২০ শে ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেল সাড়ে ৬টায় মালবারি প্লেসের সামনে সকল ভাষার মানুষকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। এ দায়িত্ব আমাদের সকলের। এ সংগ্রাম বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার সংগ্রাম। তাই সবাইকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে।
মোঃ আবু হোসেন: প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশী টিচার্স এসোসিয়েশন, ইউকে।