আব্দুর রাজ্জাক : একজন কিংবদন্তির গল্প এবং পরজীবী রাজনীতির অপ্রকাশিত কথা (এক)
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭
ছরওয়ার আহমদ:
মানুষ মরণশীল। কিন্তু কিছু মানুষ তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে অমরত্ব লাভ করে। সিলেট এর বিয়ানীবাজারের কৃতী সন্তান, দানশীল, পরোপকারী সমাজসেবী ও রাজনীতিবিদ জনাব আব্দুর রাজ্জাক তেমনি এক ব্যক্তিত্ব; যিনি ছাত্রাবস্থা থেকে শুরু করে তাঁর সারাটি জীবন মানুষের কল্যাণে উজাড় করে দিয়েছেন। বিয়ানীবাজারের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে জনাব আব্দুর রাজ্জাক এক অসাধারণ ব্যক্তি, যিনি জনসেবাকে রাজনীতির মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। ভালো কাজে দলমত নির্বিশেষে মানুষের উপকার করাই ছিলো তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ। তার মহৎ গুনাবলীকে যারা হিংসার চোখে দেখেছেন কিংবা তার কাছের রাজনৈতিক বিরুদ্ধাচারণকারীরাও স্বীকার করবেন যে, তিনি মানুষের দুর্দিনে, মানুষের পাশে স্বার্থহীনভাবে পাশে থাকতেন, তাদের সাধ্যাতীত সহযোগিতা করতেন হাসি মুখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা দুটোই অর্জন করেছেন। বিয়ানীবাজারের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে জনাব আব্দুর রাজ্জাক একজন কিংবদন্তী। বর্তমানে বার্ধক্যজনিত কারণে পারিবার নিয়েই তাঁর সময় কাটছে। সবার মতো, কালের যাত্রাপথে একদিন ধরনী ত্যাগ করলেও তিনি গণমানুষের মাঝে শ্রদ্ধার আসনে সমাসীন থাকবেন। তাঁর মতো মহৎপ্রাণ,আদর্শিক ব্যক্তিত্ব সমাজের নিয়ন আলো।
অনেকদিন থেকে বিয়ানীবাজারের কয়েকজন কিংবদন্তী আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের মহান সংগঠককে নিয়ে কিছু লিখবো বলে ভাবছি। ব্যস্ততার কারণে সময় হয়ে ওঠেনি। গত ১৬ই অক্টোবর ২০১৭ইং স্যোসাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাবেক ছাত্রলীগনেতা ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বিয়ানীবাজার উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি অনুজ ছরওয়ার হোসেন দীর্ঘদিন পর লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা মহান ব্যক্তি আব্দুর রাজ্জাক; যাকে আমি ‘চাচা’ বলে সম্বোধন করি, তাঁর কর্ম ও দানের প্রতি বিনম্র কৃতজ্ঞতাবোধ জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে বাসকরা প্রবাসী এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে স্ট্যাটাসটি সমাদৃত হয়েছে। যা রাজ্জাক চাচার প্রতি মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ বলে প্রমাণিত।
এছাড়া কয়েকদিন পূর্বে বিয়ানীবাজারের সাপ্তাহিক ’আগামী প্রজন্ম’ও অসুস্থ আব্দুর রাজ্জাক চাচাকে নিয়ে একটি চমৎকার রিপোর্ট করেছে, যা অনেকের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। ধন্যবাদ জানাচ্ছি স্নেহের ছরওয়ার হোসেন ও সাপ্তাহিক আগামী প্রজন্মকে। লক্ষ্য করেছি, অনেকে মুক্ত ও উদার মনে রাজ্জাক চাচার অবদানকে স্বীকার করে কৃতজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন। এসকল মানবিক বোধের মানুষদের কৃতজ্ঞতাবোধকে আমাদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা মনুষ্যত্বের স্বরুপ ও জাগরণ হিসাবেই আমি দেখি। আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং সকলের সাথে আমিও ব্যক্তিগতভাবে তাঁর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মূলতঃ একজন উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞচিত্ত মানুষের এই উদার জাগরণ আজ নিবেদিত রাজনীতিবিদ,সমাজসেবি আব্দুর রাজ্জাককে নিয়ে লিখতে আমাকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করেছে।
জনাব আব্দুর রাজ্জাকের রাজনৈতিক জীবনকে আমি দুভাগে দেখতে পাই। প্রথমত; তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান এবং দ্বিতীয়ত; ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক তাঁকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা। এই দুটি বিষয়কেই আমি পর্যবেক্ষণ করেছি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান ও রাজনৈতিক সামাজিক কাজের পর্যবেক্ষণ হিসাবে। কেউ লেখা পড়ে মনঃক্ষুন্ন হলে আমি বিনীতভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
এক. বিয়ানীবাজার আওয়ামী পরিবারে রাজ্জাক চাচার অবদান অপরিসীম। জনাব আব্দুর রাজ্জাক ১৯৬৮সালে বিয়ানীবাজারে কলেজ প্রতিষ্ঠার পরে এই জনপদে ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা (যদিও তিনি তখন সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র ছিলেন), যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি (১৯৭৪), বিয়ানীবাজার উপজেলা কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও পরবর্তীতে সিলেট জেলা কৃষকলীগের সভাপতি হওয়াসহ বিয়ানীবাজারে আওয়ামী লীগের একজন শক্তিমান, সৎ ও দক্ষ সংগঠক ছিলেন। তিনি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য এবং কিংবদন্তি নেতা শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ঘনিষ্টজন। এছাড়াও তিনি ঢাকাস্থ বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি ও জালালাবাদ সোসাইটির অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন দানশীল ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবান ব্যক্তি। ফলে বিয়ানীবাজারের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, খেলাধুলাসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড সমান্তরালভাবে তাঁর দান ও সহযোগিতায় পরিপূষ্ট হয়েছে। একজন ট্রাভেলস বা ওভারসীজ ব্যবসায়ী হিসেবে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অনেকেই তাঁর সাহায্য সহায়তা লাভে কৃতার্থ হয়েছেন। আপাদমস্তক তিনি ছিলেন একজন মহৎপ্রাণ ব্যক্তি।
জনাব আব্দুর রাজ্জাক-এর কাছে বিয়ানীবাজারের অনেকের মতো আমিও ঋণী। পূর্বে আমাদের প্রবাসী অধ্যুষিত এই এলাকার লোকজন ইউরোপ বা আমেরিকায় যারা কন্ট্রাকের মাধ্যমে যেতেন, তাদের সকলকে ৮/১০ লক্ষ টাকা মধ্যস্থ হিসাবে কারো কাছে জমা রাখতে হতো। ঢাকায় বলা যায় শতভাগ বিশ্বাসী হিসাবে আমাদের এলাকার একমাত্র আমানতদার ছিলেন এই রাজ্জাক চাচা। বৃহত্তর সিলেটের শত শত মানুষের তিনি আমানত রেখেছেন। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, তিনি কোনোদিন কারো আমানত খেয়ানত করেছেন, তা ঘুর্ণাক্ষরেও শুনিনি। অসুস্থতার কারণে রাজ্জাক চাচা দীর্ঘদিন থেকে ঘরবন্দী। কিন্তু আজও এই আস্থার জায়গা কেউ পূরণ করতে পারেনি। আমি নিজে একবার আমেরিকা ও একবার কানাডার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলাম। দু’বারই চাচাকে আমানতদার হিসেবে মধ্যখানে রেখেছি। কিন্তু কোনোবারই উনার কাছে টাকা জমা রেখে যাইনি। কারণ, তখন ঢাকায় টাকা আনা নেওয়া ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। চাচা আমাকে এই ঝুঁকিতে যেতে বারণ করতেন। আমার ও আমার পরিবারের প্রতি এক ধরনের অন্ধ বিশ্বাসে এতগুলো টাকার দায়িত্ব নেওয়া চাট্টিখানি কথা নয় ! চাচার এই মহত্বের কথা আমার চিরকাল মনে থাকবে।
রাজ্জাক চাচা ঢাকায় শুধু অর্থ উপার্জনের জন্য ছিলেন না। তিনি অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি ঢাকায় এলাকার অসহায় মানুষের অনেক কল্যাণ সাধন করেছেন। ২০০০ সালের একটি কথা মনে পড়ছে। আমরা বিয়ানীবাজারের সামাজিক সংগঠন কণ্ঠকলি সংসদ কর্তৃক পরিচালিত অন্তরা সংগীত বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ঢাকায় যাবো বাংলাদেশ টেলিভিশনে ত্রিশ মিনিটের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রেকর্ডের জন্য। প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, তখনকার বাংলাদেশে মূলতঃ বাংলাদেশ টেলিভিশন ছিলো একমাত্র স্যাটেলাইট চ্যানেল, যদিও তখন ‘এটিএন বাংলা’ ছিলো, তবে তা শুধুমাত্র শহরাঞ্চলে ডিশ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেখা যেতো। তাই বিটিভি’ই ছিলো মানুষের শেষ ভরসাস্থল। আমাদের টাকার উৎস ছিল সঙ্গীত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংগঠকদের উপর অর্পিত চাঁদা। টিভির রেকর্ডিংয়ের দু’দিন পূর্ব পর্যন্ত আমরা ঢাকায় যাতায়াত ও থাকা খাওয়ার প্রয়োজনীয় টাকা তুলতে ব্যর্থ হই । এমতাবস্থায় প্রথমে আমাদের এলাকা থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ-এর কাছে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়। তিনি সাহায্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে, আমাদের গ্রুপের সবাই বললেন, রাজ্জাক সাহেবকে বলে দেখার জন্য, উনি কোনো সাহায্য করতে পারেন কি না। আমি চাচাকে ফোন করলাম এবং সমস্যার কথা বললাম। চাচা প্রশ্ন করলেন ‘তোমাদের টিমে লোকসংখ্যা কত জন”? আমি বললাম, প্রায় ৫০ জন হবে। তিনি বললেন, ‘কোনো সমস্যা নেই, তোমরা ঢাকায় চলে আসো, আমি তোমাদের থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা করবো’। চাচা আমাদের জন্য তাঁর ধানমন্ডির বাসায় থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা করলেন। বর্তমানে তিনি যে বাসায় থাকেন, সেসময় এই বাসার পাঁচতলা পর্যন্ত কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিলো। এই বাসার গ্রাউন্ড ফ্লোরে উনার পরিবার থাকতেন এবং অন্যান্য ফ্লোরও খালি ছিলো। আমাদের জন্য উপরের ফ্লোরগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করলেন এবং খাবারের জন্য বাবুর্চি রাখলেন। এখানে উল্লেখ করতে হয়, আমাদের এই ৫০জনের গ্রুপে বর্তমান বিয়ানীবাজার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ, আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষাগুরু অধ্যক্ষ দ্বারকেশ চন্দ্র নাথও ছিলেন। এছাড়াও পিএইচজি হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক শ্রদ্ধেয় শ্রী বিরাজ কান্তি দেব (যাঁর কাছে আমি প্রাইভেট পড়েছি), কণ্ঠকলি সংসদের পরিচালক মীর হোসেন আল মোহাম্মদী খোকন ভাইসহ অনেকেই ছিলেন।
প্রসঙ্গত কণ্ঠকলি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মীর হোসেন আল মোহাম্মদী খোকন দীর্ঘ দিনের ধারাবাহিক প্রচেষ্ঠায় বিয়ানীবাজারকে জাতীয়ভাবে প্রকাশের এই আলোকিত উদ্যোগটি নেন। আমাদের সবার প্রিয় ‘খোকনভাই’ বিয়ানীবাজারে সাহিত্য-সংস্কৃতি আন্দোলনে ৮০র দশকে অন্যতম একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যিনি নিজের পয়সা খরচ করে বিয়ানীবাজারে সংস্কৃতিবান্ধব বিভিন্ন অনুষ্ঠান, শিশুদের বিনামূল্যে সঙ্গীত শিক্ষাদান এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা জন্মাতে এদতঅঞ্চলে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন। বিটিভিতে আমাদের অনুষ্ঠানের নাম ছিল ‘নিবেদন’। অনুষ্ঠানের কাজে রাজধানীতে, আমরা রাজ্জাক চাচার বাসায় তিন দিন ছিলাম। সেই সময়ের চোখে পড়েছে তার মানবিক হৃদ্যতার চিত্র। এই সময়েই তাঁর বাসায় আসেন বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জনাব কুতুব উদ্দিন ও তাঁর দুজন আত“ীয়। বাসাভর্তী আমরা পঞ্চাশজন, থাকা ও খাবার দাবার ইত্যাদিতে আমরা এমনিতেই বড় ঝামেলায় ফেলেছি তাঁকে। তিনি বাসায় এতো ঝামেলার মধ্যেও আমাদের সাথে জনাব কুতুব উদ্দিন সাহেবদেরকেও হাসিমুখে থাকতে দিয়েছিলেন। সেদিন আমরা অনেকে তাঁর এ মহানুভবতায় অসম্ভব মুগ্ধ হয়েছিলাম। নিজ অঞ্চলের মানুষের প্রতি অপার ভালোলাগা দেখে বলা যায় আমরা বাকরুদ্ধ ছিলাম। সেই সময়ের স্মৃতিগুলো আজও মনে স্বচ্ছ ভাবেই ভেসে ওঠে। সর্বোপরি আমরা বিয়ানীবাজার অন্তরা সংগীত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পরিচালকগণ রাজ্জাক চাচা ও তাঁর পরিবারের আত“ীয়তায় অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমাদের পক্ষে তিনি ও তাঁর পরিবারের অশেষ ঋণ পরিশোধ হবার নয় ।
এতো আনন্দের মাঝে ঘটে একটি দুঃখজনক ঘটনা। বাংলাদেশ টেলিভিশনে আমাদের এই অনুষ্ঠানের প্রস্তাবনায় বিয়ানীবাজারের পরিচিতি নিয়ে শুরুতেই পাঁচ মিনিটের একটি বক্তব্য ছিল। আমরা বিয়ানীবাজারে বসেই কর্মকর্তাবৃন্দ সিদ্ধান্ত নিলাম, এই বক্তব্যটি রাজ্জাক চাচার কণ্ঠে রেকর্ড হবে এবং আমাদের রেকর্ডকৃত অনুষ্ঠানের সূচনাতেই পাঁচ মিনিট এই বক্তব্যটি প্রচার হবে। আমরা ঢাকায় যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই বিষয়ে রাজ্জাক চাচাকে কিছু বলিনি। ঢাকায় যাওয়ার পরদিন সকালবেলা আমরা তিন/চারজন প্রথমে বৈঠক করি এবং পরে রাজ্জাক চাচার সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে বিয়ানীবাজার অঞ্চল বিষয়ে বলতে অনুরোধ করি। প্রস্তাবটি তাঁর মনোপূত হয় এবং তিনি সানন্দে রাজি হন। আমরা আমাদের লেখা বক্তব্যের স্ক্রিপ্ট তাঁকে দিলাম। তিনি স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী যথারীতি বক্তব্য রাখলেন এবং ১৮ জুলাই ২০০০ সালে তা রেকর্ডও হলো।
ওই সময়ে আমাদের প্রতি রাজ্জাক চাচার মহানুভবতা ছিলো নিখাঁদ ও অনেক বড়। আমরা সবাই ভাবলাম, তিনি যেহেতু জনবান্ধব রাজনীতি করেন এবং আমাদের প্রতি বিশাল আন্তরিকতা প্রকাশ করে অনেক কিছু করছেন সেহেতু তাঁর প্রতি এই সামান্য মূল্যায়নে হয়তো তিনি আমাদের প্রতি একটু খুশি হবেন। বস্তুত, তাঁকে দিয়ে বক্তব্যটি প্রকাশের সুযোগ পেয়ে আমরাও খুব আনন্দিত ছিলাম। অবশেষে রাজ্জাক চাচার সহযোগিতায় আমাদের অনুষ্ঠান সফলভাবে রেকর্ড করে বাড়িতে চলে আসি এবং টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে প্রচারের দিনক্ষণ জানিয়ে দেন। (চলবে..)
লেখক: সাবেক ভিপি, ছাত্র সংসদ (১৯৯৫-৯৬), বিয়ানীবাজার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, বিয়ানীবাজার, সিলেট । বর্তমানে যুক্তরাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা।